আপনি কি মাঝেমধ্যে ভয় এবং অস্বস্তির অনুভূতিতে পড়েন? কোনোভাবেই কি নিজের নার্ভাসনেস দূর করতে পারেন না? যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে আপনার Anxiety এর সমস্যা হয়েছে।
এক্ষেত্রে বিষয়টি আরেকটু শিউর হতে দরকার পড়বে অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার এর লক্ষণগুলির সাথে আপনার সমস্যা মিলিয়ে নেওয়া। সবশেষে Anxiety থেকে মুক্তির উপায় ফলো করলেই দ্রুত এই মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। বিস্তারিত জানতে সাথেই থাকুন।
Anxiety থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানার আগে শুরুতে চলুন জেনে নিই অ্যাংজাইটি অ্যাটাক কি সে-সম্পর্কে। অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হলো সবসময় ভয় ভয় লাগা কিংবা অস্বস্তি লাগা।
মানসিক চাপের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে এটি যেকোনো ব্যাক্তির মাঝেই পরিলক্ষিত হতে পারে। পরীক্ষা দেওয়ার আগে বা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেক বেশি নার্ভাস হয়ে গেলে সাধারণত সেই সমস্যাকে বলা হয় অ্যাংজাইটি অ্যাটাক।
আপনার মাঝে এই সমস্যা আছে কিনা তা বুঝতে শুরুতেই জেনে রাখতে হবে অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার এর লক্ষণ! অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার এর লক্ষণগুলি হলো:
এবার আসি Anxiety রোগ কত প্রকার হতে পারে সে ব্যাপারে। যেমন:
GAD: GAD হলো একধরণের সাধারণ Anxiety রোগ। যাকে বলা হয় জেনারেল Anxiety এর সমস্যা। যারা নিজেদের স্বাস্থ্য, পরিবার কিংবা টাকা পয়সা নিয়ে টেনশনে থাকে তাদের এই ধরণের রোগ দেখা দিতে পারে। যদি ৬ মাস ধরে টানা অনেক বেশি দুশ্চিন্তা হতে থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে রোগীর GAD বা জেনারেল Anxiety এর সমস্যা ধরা পড়েছে।
প্যানিক ডিসঅর্ডার: প্যানিক অ্যাটাক বা প্যানিক ডিসঅর্ডার অনেকেই মোটামুটি ফেইস করে থাকে। প্যানিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্যানিক অ্যাটাক হয়। যা দেখা দেয় হঠাৎ করেই। কোনো বিপদ না থাকলেও এই ধরণের রোগের কারণে রোগী অনেক বেশি ভয় পেতে থাকে, হাত পা কাঁপতে থাকে। এই ধরণের সমস্যা একজন রোগীর ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট বা তার বেশি স্থায়ী হতে পারে।
ফোবিয়া: ফোবিয়া নামটির সাথে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। ফোবিয়ার সমস্যাও এক ধরণের Anxiety। ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর অযথাই অনেক বেশি ভয় কাজ করে। বিষয়টি বাস্তবজীবনে কোনো প্রকৃত বিপদ সৃষ্টি না করলেও রোগী বরাবরই বিষয়টি নিয়ে অনেক ভয় পেতে থাকে। ফোবিয়া আবার বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। কারো উপর থেকে নিচের ফোবিয়া থাকে, কারো মাছ নিয়ে ফোবিয়া থাকে কিংবা কারো পাহাড় নিয়ে ফোবিয়া থাকে।
উপরোক্ত সকল প্রকার Anxiety রোগকে বিদায় জানাতে হলে অবশ্যই আপনাকে Anxiety থেকে মুক্তির উপায়গুলি ফলো করতে হবে। বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটির সাথেই থাকুন।
এবার চলুন Anxiety থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানি। জানি কিভাবে এই ধরণের মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে:
Anxiety থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে আপনাকে অবশ্যই সাইকোথেরাপি নিতে হবে। এই ধরণের থেরাপি আপনার আচরণগত পরিবর্তন করতে সাহায্য করতে পারে। চিন্তাভাবনা এবং আচরণের বিভিন্ন উপায় শিখতে সিবিটি থেরাপি নিতে পারেন। যা আপনার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা অনুযায়ী আপনার জন্যে উপযুক্ত কিনা তা চিকিৎসক শিউর করে দেবেন।
Anxiety থেকে মুক্তির উপায় হলো এই রোগের ঔষধ সেবন করা। বিশেষ করে এক্ষেত্রে অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি ঔষুধ এবং কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস মেডিসিন সেবন করা যেতে পারে। তবে আপনার জন্যে কোন মেডিসিনটি উপযুক্ত তা জানতে অবশ্যই ঔষধ সেবনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
নিজের সাথে কথা বলা হলো Anxiety থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। এক্ষেত্রে যখনই আপনার Anxiety এর সমস্যা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাবে তখনই নিজের সাথে কথা বলে নিজেকে বোঝাতে পারেন। চারপাশে ভয়ের কোনো কারণ নেই ভেবে নিজেকে স্বস্তি দিতে পারেন।
ভয় পান বলে সবসময় সব পরিস্থিতিকে এড়িয়ে চলবেন না। কারণ পরিস্থিতিই আপনাকে পরিবর্তন করতে পারে, আপনার রোগ সারাতে পারে। আপনি ভাবতে পারেন যে আপনি ক্লাসে কথা বলা বা সেই নতুন ব্যক্তির সাথে পরিচিত হওয়াটা আপনার জন্য যথেষ্ট কঠিন কাজ। কিন্তু একই সাথে এটাও ভেবে নিতে পারেন যে নতুন এই পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলে নতুন কিছু শেখা যাবে। সুতরাং নিজেকে মোটিভেট করতে করতেই বিভিন্ন নতুন পরিস্থিতির সাথে পরিচিত হোন।
মনে হতে পারে Anxiety থেকে মুক্তির উপায়গুলি ফলো করা অনেক সহজ! কিন্তু বাস্তবজীবনে এসব উপায় ফলো করতে গিয়ে আপনাকে যথেষ্ট প্যানিক অ্যাটাকে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে উপায় হলো লেগে থাকার মানসিকতাকে কাজে লাগানো। আশা করি এতেই আপনার এই রোগের সমাধান নিশ্চিত উপস্থিত আছে!