ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আসলে আলাদাভাবে কিছুই বলার নেই। কারণ বর্তমানে যেভাবে প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে, ডিজিটাল মার্কেটের এই সেক্টরটি ততটাই প্রসারিত হচ্ছে। মোট কথা যত বেশি নতুন নতুন টেকনোলজি মার্কেটে আসবে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ ততবেশি অর্থবহ হয়ে উঠবে। কিভাবে? জানতে হলে পুরো লেখাটির সাথেই থাকুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানার আগে আমাদের জানতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর সম্পর্কে। এতে করে ভবিষ্যতে কোন লজিকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব বেড়ে যাবে তা বুঝতে সুবিধা হবে।
এসইও: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অনেক বড় একটি সেক্টর হলো এসইও। সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে এই সেক্টরটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যাদের বিজনেস বা মার্কেটিং কেবল ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে তারা এই সেক্টরে কাজ করে থাকেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: যেহেতু আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে সেহেতু এটিকেও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সফল সেক্টর বলা যায়। সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মার্কেটিং করলে সেটিকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে।
ইমেল মার্কেটিং: লিড জেনারেশন ক্যাটাগরির এই মার্কেটিংটিও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অংশ। টার্গেট করা অডিয়েন্সদের সাধারণ ইমেইলের মাধ্যমে মার্কেটিংয়ের আওতায় আনার প্রসেসকে ইমেইল মার্কেটিং বলে।
পে-পার-ক্লিক অ্যাডভারটাইজিং: যাদের ভালো ইনভেস্ট করার ক্ষমতা আছে তারা এই পে-পার-ক্লিক অ্যাডভারটাইজিং ব্যবহার করে ডিজিটাল মার্কেটিং করে থাকে। মূলত সার্চ ইঞ্জিন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাফিক আনতে এই ধরণের মার্কেটিং ব্যবহার করা হয়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো কমিশনভিত্তিক মার্কেটিং। আপনি যদি কমিশন হিসাবে কাজ করতে চান বা করাতে চান তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এই ক্যাটাগরিটিতে কাজ করতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর সম্পর্কে যেহেতু জেনে নিয়েছেন সেহেতু এবারে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ বিষয়টি হজম করতে খুব একটা কষ্ট হবে না। আসুন তবে আর কথা না বাড়িয়ে আলোচনা করি ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে:
AI এবং মেশিন লার্নিং সেক্টরটি বর্তমানে দিনকে দিন অনেক বড় হচ্ছে, চাহিদা বাড়ছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের। এআই অ্যালগরিদমকে কাজে লাগিয়ে মার্কেটারেরা সহজে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে পৌঁছে যেতে পারছে অডিয়েন্সের কাছে। ইমেল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টিংয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে অটোমেশন সিস্টেম। যে সিস্টেমের প্রায় প্রতিটি সেক্টরই অটো কাজ করে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা বুঝতে কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে। বর্তমানে লাইভ স্ট্রিমিং এবং শর্ট ভিডিওর মাধ্যমে মার্কেটিং করার প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে গেছে। ক্যুইজ, পোল, এবং ইন্টারেক্টিভ ইনফোগ্রাফিক্সের মাধ্যমে সহজেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিং করা সম্ভব হচ্ছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ হিসাবে আমরা আজকের দিনের ভার্চুয়ার রিয়েলিটির দিকে মনোযোগ দিতে পারি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাহায্যে সহজেই অডিয়েন্সের সাথে কানেক্টেড থাকার পাশাপাশি এআই মডেল তৈরি করিয়েও প্রচুর মার্কেটিং করা সম্ভব হচ্ছে।
বর্তমানে টেক্সটের সাহায্যে কোনো প্ল্যাটফর্মে সার্চ করার প্রবণতা অনেকটাই কমে এসেছে। সাধারণ মানুষ এখন ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হচ্ছে ভয়েস সার্চিং সিস্টেমে। আর এই ভয়েস সার্চিং সিস্টেমকে কেন্দ্র করেও ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ পরিবর্তিত হচ্ছে। ভয়েস কন্টেন্টের চাহিদা বাড়ছে গতানুগতিক টেক্সট কন্টেন্টের তুলনায়৷
আপনি হয়তো খেয়াল করবেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা আগের চাইতে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বিভিন্ন প্রজেক্ট, কাজ, জব ইত্যাদির অপশন বেড়েছে। এর কারণ কি?
মূলত এর পেছনের মূল নায়ক হলো স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেটের অত্যধিক ব্যবহার। বর্তমানে ৬.৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। যার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের কল্যাণে তারা বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের খোঁজ পাচ্ছে, অর্ডার করছে এবং ঘরে বসে সুবিধা ভোগ করছে।
আমাদের দেশসহ সারাবিশ্বে Facebook, Instagram, Twitter, LinkedIn এবং TikTok ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে চোখ বন্ধ করে বলা যেতে পারে সারা বিশ্বে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা ভবিষ্যতে কোনো অংশেই কমবে না। বরং তা বহুগুণ বেড়ে বিপ্লব সৃষ্টি করবে।
বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হলো এসইও। গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিন থেকে ইউনিক ট্রাফিক পেতে এই কাজটি মূলত করা হয়ে থাকে।
অন্যদিকে এর পাশাপাশি আমরা কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের কথাও বলতে পারি। ব্র্যান্ডকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলতে এই ধরণের মার্কেটারদের চাহিদা আজকাল দেখার মতো।
পাশাপাশি যারা Facebook, Instagram, LinkedIn এবং TikTok-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলিতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সার্ভিস দিচ্ছে, তাদেরও প্রচুর কাজের চাপ যাচ্ছে আজকাল। সবশেষে বলবো ভিডিও মার্কেটিংয়ের কথা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই সেক্টরেও প্রচুর কাজের চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।