ক্যারিয়ার গাইডলাইন বলতে যারা ভারি ভারি কথাবার্তা মনে করতেন আমাদের আজকের এই লেখাটি তাদের জন্যে। আজ আমরা আলোচনা করবো ক্যারিয়ার গাইডলাইন সম্পর্কে এমনকিছু তথ্য যা হয়তো আপনি জানতেন না কিংবা কেউ কখনো আপনাকে বলেইনি!
ক্যারিয়ার গাইডলাইনে দরকার জব ক্রাফ্টিং! এতোটুকু তো জানলেন। কিন্তু এই জব ক্রাফ্টিংটাই বা আবার কি?
মূলত জব ক্রাফ্টিং হলো এমনকিছু টিপস বা নিয়ম যেগুলি আপনাকে আপনার জব লাইফে ফলো করতে হবে। এসব টিপস ফলো করতে না পারলে হয়তো আপনার জব চলে যাবে না! তবে এসব টিপসের অভাবে আপনার জবখানা কিছুটা নড়বড়ে হয়ে থাকতে পারে।
এবার আসি ক্যারিয়ার গাইডলাইন তৈরিতে জব ক্রাফ্টিং কিভাবে করবেন সে ব্যাপারে। মূলত নিচের টিপসগুলি ফলো করতে পারেন:
টাস্ক ক্রাফ্টিং: মাঝেমধ্যে আপনি আপনার জবের কাজের পরিধি বা প্রকৃতি পরিবর্তন করতে পারেন। ব্যক্তিগত আগ্রহ বা দক্ষতার সাথে মিলে যায় এমন কোনো বাড়তি প্রজেক্ট বা কাজ পেলে তা ট্রাই করতে পারেন।
রিলেশনাল ক্রাফটিং: ক্যারিয়ার গাইডলাইনে এই রিলেশনাল ক্রাফটিং বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর মানে হলো কিছুটা নেটওয়ার্ক তৈরির মতো। পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ খোঁজা, কলিগদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি ইত্যাদি হলো এই ধরণের ক্রাফটিংয়ে অংশ।
ক্যারিয়ার গাইডলাইন তৈরিতে উপরোক্ত ২ টি গুরুত্বপূর্ণ জব ক্রাফ্টিং টিপসগুলি ফলো করতে পারেন। এতে করে দেখবেন আপনার ক্যারিয়ার গাইডলাইনভিত্তিক কাজ অনেকটাই কমে আসবে।
ক্যারিয়ার গাইডলাইন নিয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের অবশ্যই ক্যারিয়ার প্ল্যানিং নিয়ে কথা বলতে হবে। কারণ এই ক্যারিয়ার প্ল্যানিংই মূলত ক্যারিয়ার গাইডলাইনের মূল অংশ। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ অংশে আমরা অনেক সময় ভুল করে থাকি। যেসব ভুল এই অংশে একেবারেই মানা যায় সেসব ভুলগুলি হলো:
পরিষ্কার লক্ষ্য না থাকা
ক্যারিয়ার প্ল্যানিং করার সময় সবচেয়ে বড় ভুল হলো পরিষ্কার লক্ষ্য না থাকা। এই একটি ভুল আপনাকে সঠিক ক্যারিয়ার গাইডলাইনের পরিবর্তে বিভ্রান্তি এবং দিকনির্দেশের অভাবে ফেলবে। পাশাপাশি লং টার্ম লক্ষ্যগুলিতে ফোকাস করতে হবে। কেবল শর্ট টার্ম লক্ষ্যগুলিতে ফোকাস করে ক্যারিয়ারের বারোটা বাজানো যাবে না।
ব্যক্তিগত স্বার্থ উপেক্ষা করা
ক্যারিয়ার গঠনের সময় ব্যক্তিগত স্বার্থ উপেক্ষা করাটাই মারাত্মক একটি ভুল। যা কোনোভাবেই করা যাবে না। আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের প্রায়োরিটি খুঁজে নিতে হবে নিজেকে। পাশাপাশি বাদ দিতে হবে শুধুমাত্র বাহ্যিক চাপ বা সামাজিক প্রত্যাশার উপর ভিত্তি করে ক্যারিয়ার পছন্দ করার মতো মস্ত বড় ভুলটি৷
রিসার্চ না করেই কাজে নামা
কখনোই রিসার্চ না করে ক্যারিয়ারে নামা যাবে না। আর এই টিপসটি হলো ক্যারিয়ার গাইডলাইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট। সুতরাং নিয়মিত নিজের সেক্টরের উপর রিসার্চ করতে হবে। ওই সেক্টরের মার্কেটে নতুন কোন কোন স্কিল অনেক বেশি সেল হচ্ছে তা রিসার্চ করে বের করতে হবে। সে অনুযায়ী নিজেকে আপ টু ডে রাখতে হবে। এতে করে নিজের স্থান দখল করে রাখাটা অনেকটাই সোজা মনে হবে।
নেটওয়ার্কিংকে গুরুত্ব না দেওয়া
ক্যারিয়ার গাইডলাইন হিসাবে ইন্ট্রোভার্টদের বলবো আপনার ইন্ট্রোভার্ট মুড কখনোই ক্যারিয়ারকে যেনো প্রভাবিত না করে। ক্যারিয়ার গঠনে নেটওয়ার্ক তৈরি করাটা অনেক বেশি জরুরি। সুতরাং একটি প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করুন। সেখানে অন্যদের সাহায্য করার চেষ্টা করুন। নিজেও প্রয়োজন সাহায্য খুঁজুন। সবসময় প্রফেশনালিজম বজায় রেখে কন্টেন্ট দিন।
প্ল্যান আপডেট না করা
ক্যারিয়ার প্ল্যান যদি কখনো আপডেট করার দরকার পড়ে সেক্ষেত্রে তা ইগনোর করাটা হলো ক্যারিয়ার গঠনের অনেক বড় একটি ভুল। যা কোনোভাবেই করা যাবে না। কারণ জীবন গতিশীল। আপনার কর্মক্ষেত্রও গতিশীল। সুতরাং সময় অনুযায়ী বেটার অপশন পেলে অবশ্যই আপনাকে তা ধরে নিতে জানতে হবে।
অনেকেই ভাবেন ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা সহজ হয় কখন, কখন ক্যারিয়ার পরিবর্তন করতে পারলে জীবনটা ইতিবাচকভাবে পাল্টে যাবে।
আসলে এভাবে ক্যারিয়ার পরিবর্তনের আলাদা কোনো সময় হয় না। তবে যখনই আপনার পূর্বের ক্যারিয়ারের প্রতি রীতিমতো অনাগ্রহ কাজ করবে তখনই আপনি তা পরিবর্তন করতে পারেন।
তাছাড়া পূর্বের ক্যারিয়ার নিয়ে কাজ করাকালীন সময়ে যদি আপনার সামনে আরো ভালো কোনো অপশন হাজির হয় তবে তা আপনি নিঃসন্দেহে লুফে নেবেন৷
তবে সব কথার মোট কথা হলো ক্যারিয়ারের শুরুতেই সবকিছু গুছিয়ে ক্যারিয়ার গাইডলাইন মেনে সামনে এগিয়ে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ বহু বছরের পুরোনো ক্যারিয়ার সেক্টর ফেলে নতুন ক্যারিয়ার সেক্টরে কাজ করলে সবকিছু গুছিয়ে নিতে প্রচুর সময় লেগে যেতে পারে।